সারাদেশে ২৪ ঘন্টায় ৪৪৯ মামলায় ৯,১৯,৭০০ টাকা জরিমানা আদায় বিআরটিএর

কুমিল্লা বিআরটিএর মোবাইল কোর্টের আতঙ্কে ৩০ চালক, তদন্তের সময় পাচ্ছেনা উপপরিচালক!

Passenger Voice    |    ০৪:৩৮ পিএম, ২০২৪-০৪-২৩


কুমিল্লা বিআরটিএর মোবাইল কোর্টের আতঙ্কে ৩০ চালক, তদন্তের সময় পাচ্ছেনা উপপরিচালক!

জয়নাল আবেদীনঃ সারাদেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন, একই সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতিত মোটরযানের চালকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোন ধরণের ছাড় দিচ্ছে না মেয়াদোত্তীর্ণ ড্রাইভিং লাইসেন্সের চালকদেরও। সোমবার (২২ এপ্রিল) সারাদেশে পরিচালনা করা মোবাইল কোর্টে ৩৫টি গাড়িকে ডাম্পিং করেছে বিআরটিএ, একই সাথে ৪৪৯ টি মোটরযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ৯ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সারাদেশের মতো অভিযানে পিছিয়ে নেই বিআরটিএর কুমিল্লা সার্কেল।

সূত্র বলছে, কুমিল্লা বিআরটিএর ইস্যু করা ৩০ জন পেশাদার চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য  বিএসপি একাউন্টের মাধ্যমে অনলাইনে অমিল সংশোধনের আবেদন করলে ঘুষ না পাওয়ায় এইসব চালকদের আবেদন গত ১০ মার্চ বাতিল করেন কুমিল্লা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) ফারুক আলম। বিষয়টি নিয়ে গত ১৪ মার্চ “সহজীকরণ সেবায় ঘুষের জন্য জটিলতা তৈরি করছে কুমিল্লা বিআরটিএ” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্যাসেঞ্জার ভয়েস। 

প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিআরটিএর সদর কার্যালয় থেকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদাকে। তবে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রায় ৪০ দিন পার হলেও এখন তদন্ত শুরু করতে পারেনি এই কর্মকর্তা। এই দিকে বিআরটিএর সারা দেশে শুরু করেছে মোবাইল কোর্ট। ছাড় পাচ্ছেনা কেউ, বিআরটিএর পাশাপাশি সারাদেশের জেলা প্রশাসনও সড়কে লাশের মিছিল থামাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে মেয়াদৌত্তীর্ণ মোটরযান ও অবৈধ চালকদের বিরুদ্ধে। কুমিল্লা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) ফারুক আলমকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে দেখা যায় কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন অংশে। অমিল সংশোধনের আবেদন বাতিল হওয়া অনেক চালক ইতিমধ্যে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়েছেন আবার যারা গাড়ি চালাচ্ছেন তারা সব সময় বিআরটিএর মোবাইল কোর্টে ধরা পরার আতঙ্কে রয়েছে। তবে এইসব চালক ড্রাইভিঙ লাইসেন্স পাবে সেই বিষয়ে কোন সুনিদিষ্ট তথ্য নেই কুমিল্লা বিআরটিএর কাছে। এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা এখনও তদন্ত প্রতিবেদন না পাঠানোর কারণে বিআরটিএ সদর কার্যালয় কোন ধরণের ব্যবস্থা নিতে পাচ্ছে না। 

বিআরটিএর চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক সৈদয় আইনুল হুদা প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে বলেন, কুমিল্লা বিআরটিএর বাতিল করা অমিল সংশোধনের আবেদনের বিষয়টি আমাকে তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে। তবে বিআরটিএর চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিভাগ জুড়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার বিষয়ে একটু ব্যস্ত রয়েছি। আগামী সপ্তাহে পরিচালক (ইঞ্জিঃ) স্যারের সাথে আলাপ করে তদন্তে যাব। 

বাতিল করা আবেদনের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট আব্দুস সালাম, তিনি প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে বলেন, আমি বিআরটিএর অনলাইনের মাধ্যমে আমার জন্ম তারিখ ভুলের অমিল সংশোদনের আবেদন করলে সেটা বাতিল করে বিআরটিএ। এখন কোন ভাবে লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছি না। কবে পাব সেটাও জানিনা। এখন বিআরটিএর অভিযান চলছে সব স্থানে খুব আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় গাড়ি নিয়ে। 

জানা গেছে, বিআরটিএ'র সদর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে শৃংখলা জোরদার করার লক্ষ্যে অবৈধ নসিমন, করিমন, থ্রি হুইলার, ফিটনেসবিহীন মোটরযান, লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল ও ওভার স্পীড নিয়ন্ত্রণে সোমবার সারাদেশ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। গতকাল ২২ এপ্রিল বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের অভিযানে ৭১টি মামলায় ৪ জন চালককে কারাগারে পাঠিয়েছে, ০৯টি গাড়ি ডাম্পিং করেছে একই সাথে  ০১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০  টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৭টি মামলায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে এবং ১৪ টি মোটরযান ডাম্পিং করেছে বিআরটিএ। 

জানা গেছে, বিআরটিএ'র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটসহ আট বিভাগে সারা দেশের আঞ্চলিক সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে পরিচালিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ সময়ে মোট ৪৪৯ টি মামলা হয়েছে। এতে করে এ সময়ে ০৯ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ৩৫ টি গাড়ীকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে।